আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিন (ইভিএম) কোনোভাবেই ব্যবহারের সুযোগ নেই। স্থানীয় সরকার নির্বাচনেও এই মেশিনগুলো ব্যবহার করা হবে কি না সেটিও স্পষ্ট নয়। যদি কোনো নির্বাচনেই ইভিএম ব্যবহার না করা হয়, তাহলে এই মেশিনের রক্ষণাবেক্ষনের চ্যালেঞ্জ নিতে হবে নাসির উদ্দীন কমিশনকে।
ইসি কর্মকর্তারা বলছেন, রাজনৈতিক বিতর্ক এবং এই মেশিনের ব্যবহার নিয়ে দলগুলোর মাঝে অনৈক্য থাকায় জাতীয় নির্বাচনে ইভিএম নিয়ে নতুন করে আলোচনার জন্ম দিতে চায় না নির্বাচন কমিশন। তাই বলে কয়েক হাজার কোটি টাকার মেশিন তো বাতিল করে দেওয়া যায় না। এজন্য স্থানীয় নির্বাচনে চাহিদার প্রেক্ষিতে ইভিএম ব্যবহারের পরিকল্পনা করা যেতে পারে। তবে বর্তমানে ইভিএম প্রকল্পের মেয়াদ শেষ হওয়ায় সমস্যা দেখা দিয়েছে। তাই নষ্ট হওয়ার ঝুঁকিতে থাকা মেশিনগুলো রক্ষণাবেক্ষণই এখন আসল চ্যালেঞ্জ।
ইতোমধ্যেই প্রত্যেক মাসিক সমন্বয় সভায় মাঠ পর্যায়ের ইভিএমগুলো সংরক্ষণের জন্য নির্দিষ্টভাবে ওয়্যারহাউজ নির্মাণের কথা বলে আসছেন কর্মকর্তারা। মাঠ পর্যায়ের ইভিএমগুলো এখন গলার কাঁটায় পরিণত হয়েছে বলেও জানান কর্মকর্তারা।
ইসি কর্মকর্তারা আরও জানান, ২০২৩ সালে দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনের পূর্বে এসে প্রায় প্রতিটি সেটেই কোনো না কোনো সমস্যা দেখা দেয়। প্রায় ৪০ হাজারের মতো মেশিন ব্যবহার অনুপযোগী হয়ে পড়ে। অবশিষ্ট এক লাখ ১০ হাজার মেশিনের মধ্যে অধিকাংশে ধরা পড়ে নানা ধরনের ত্রুটি। কিন্তু মেরামতের জন্য ছিল না অর্থের যোগান। ফলশ্রুতিতে হাজার হাজার কোটি টাকার ইভিএম অচল হয়ে যাওয়ার শঙ্কা দেখা দেয়।
অকেজো মেশিন মেরামত, সংরক্ষণ প্রভৃতির জন্য সাড়ে ১২শ কোটি টাকার প্রস্তাব দিলে বৈশ্বিক অর্থ সংকটের কারণ দেখিয়ে সরকার সেটি নাকচ করে দেয়। বর্তমানে অকেজো ইভিএমের সংখ্যা আরও বেড়েছে। সচল মেশিনগুলো তাই রক্ষণাবেক্ষণের জন্য প্রকল্পের অর্থ ছাড়া মেয়াদ বৃদ্ধির প্রস্তাব দিলে সরকার ইসির সেই প্রস্তাবও সম্প্রতি নাকচ করে দেয়। সব মিলিয়ে এখন প্রকল্পটি থেকে এক্সিট প্ল্যান করছে ইসি।
ইভিএম প্রকল্প পরিচালক কর্নেল সৈয়দ রাকিবুল হাসান বলেন, বর্তমানে এক লাখ ১০ হাজার মেশিন ব্যবহার অনুপযোগী। আর ৪০ হাজারের মতো মেশিন নির্বাচনে ব্যবহার করা যাবে।
তিনি বলেন, আসল কথা হলো দক্ষ লোকবলের অভাব। আমাদের প্রকল্প থাকলেও সেখানে দক্ষ কারিগরি লোকবল ছিল না। আগেও কারিগরি লোকবল নিয়ে ভাবনা হয়নি, এখনও হচ্ছে না। এ ছাড়া সংরক্ষণের কোনো ব্যবস্থা রাখা হয়নি প্রকল্পে। বর্তমানে প্রকল্পের মেয়াদ না বাড়ায় এক্সিট প্ল্যান করা হচ্ছে।